মুদির দোকান বা মনোহারি ব্যবসায় লাভ ক্ষতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেনিন

যদি চলে মনোহারি পারে না জমিদারি। কথাটি বাস্তব যদি আপনি এ ব্যবসা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারেন।

যে ব্যবসায় সুতো পরিমাণ লছ নাই এটাই সে ব্যবসা। সামান্য কিছু হিসাব নিকাশ জানলেই এ ব্যবসা করে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হতে পারবেন। অল্প চালানে কিভাবে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন এসব সকল বিষয় নিয়েই আজকে আমি আলোচনা করবো।

মুদি ব্যবসার কৌশল

প্রথমেই আপনাকে কিছু সঠিক চিন্তা ভাবনা মাথায় আনতে হবে আর সেসব সারাজীবনের জন্য ধরে রাখতে হবে। প্রথমত ব্যবহারঃ যেকোনো ব্যবসার ক্ষেত্রেই ব্যবহার টা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনাকে ব্যবহার দেখিয়েই কাস্টমার ধরে রাখতে হবে আর সে কাস্টোমারের কাছে সারাজীবন প্রডাক্ট বিক্রি করবেন। একজন যদি আপনার পাওনা টাকা মেরেও খায় তবুও তাকে না হারানোর চেষ্টা করবেন। কেননা আপনার পাওনা টাকা না দেওয়া পর্যন্ত সে কখনো বাকিতে আপনার কাছ থেকে প্রডাক্ট নিতে পারবে না। এবং নিয়মিত আসতে থাকলে তাকে ঠান্ডা মাথায় কথা বলার ও সুযোগ পাবেন দেখবেন সেও একটা সময় বুঝে আপনার পাওনা টাকা পরিশোধ করার চেষ্টা করবে। এটা তো শুধু মাত্র একটা উদাহরণ দিলাম। তাই বলছি এ ব্যবসা ব্যবহার দিয়েই করতে হবে। এবং কাস্টমারকে এমন ভাবে গড়ে তুলতে হবে যে সে যেন আপনার দোকানে বাকিতে না খাওয়ার সুযোগ পায়। যদিও নিয়ে থাকে সেটাও একটি নির্দিষ্ট টাইম দিয়ে। কেননা এ ব্যবসায় টাকা বসে রাখা যাবে না টাকা যত রোলিং হবে আপনার আয় তত বাড়বে। একটা কথা কি আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেভাবে গড়ে তুলবেন ঠিক সেভাবেই গড়ে উঠবে। এখানে আরেকটি কথা হচ্ছে এ ব্যবসায় বাকি থাকবেই তবে সেটা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তুলে ফেলতে হবে। তাও সবাইকে বাকি দেওয়া যাবেনা যারা চাকুরীজিবি, বা অন্য কোন পেশাদার, এবং ব্যবহার ভালো সুধু তাদের ক্ষেত্রেই। আর সব সময় নেশাখোর থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবেন দুই টাকা কম বিক্রি হোক কিন্তু তাদেরকে সব সময় এরিয়ে চলার চেষ্টা করবেন কেননা এরা সুরুতে খুব ভালো ব্যবহার করবে এবং দুই চার বার বাকি নিবে দিবে যখনি বেশি পরিমাণ হয়ে যাবে ঠিক তখনই এরা সরে অন্য দোকান থেকে কেনাকাটা সুরু করবে। আর মুদির দোকানের এসব কৌশল ব্যবহার ঠিক রেখে ঠান্ডা মাথায় মেইনটেইন করবেন।

মোনোহারি দোকানের পজিশন

এ ব্যবসা পজিশন টা অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এখানে হরেক রকমের পন্য থাকবে তাই হরেক রকমের কাস্টোমার আসবে। একটা পারা বা একটু এরিয়া নিয়ে কখনই এ দোকান করবেন না। একটা কথা মাথায় রাখবেন যেখানে লোক জনসংখ্যা বেশি সেখানে সেল বেশি এবং যত সেল তত লাভ। সব সময় রাস্তার আসে পাশে বা হাট বাজারে এ মুদির দোকান শুরু করার চিন্তা ভাবনা করবেন।

মুদি দোকান ডেকোরেশন ডিজাইন

এই দোকানের ডেকোরেশন খুব একটা হাই কলেটি প্রয়োজন নেই। সকল ধরনের পন্য রাখার মতো ব্যবস্থা এবং নিজের বসার জন্য একটা টেবিল রাখলেই হবে। তবে সব কিছু যেন চাকচিক দেখা যায়।

মুদি দোকানের পণ্যের তালিকা এবং কেনা বিক্রি ও লাভ

একটি মুদির দোকানে বিভিন্ন ধরনের পন্য সামগ্রি থাকে একবারে সব কিছু না উঠাতে পারলে আসতে আসতে উঠাতে হবে। নতুন অবস্থায় যা যা নিয়ে শুরু করা উচিত তার কিছু লিস্ট আমি নিম্নে তুলে ধরলাম।
১। চিপসঃ এখানে অল্প টাকা ইনভেস্ট করলে বিভিন্ন ধরনের চিপস তুলে রাখবেন আর এটাতে প্রচুর পরিমাণ লাভ। ৮ টাকা কিনে ১০ টাকা বিক্রি।
২। চাটনিঃ ৪ টাকা কেনা ৫ টাকা বিক্রি।
৩। ঝালমুরিঃ ৬ টাকা কেনা ৮ টাকা বিক্রি, আবার ৮ টাকা কেনা ১০ টাকা বিক্রি, আরো আছে ৪ টাকা কেনা ৫ টাকা বিক্রি।
৪। মটর ভাজাঃ ৪ টাকা কেনা ৫ টাকা বিক্রি।
৫। ডাল ভাজাঃ ৪ টাকা কেনা ৫ টাকা বিক্রি।
৬। কেকঃ ৪ কেনা ৫ বিক্রি।
৭। চকলেট জারঃ ১৮০ টাকা কেনা ২৫০ টাকা বিক্রি। (২৫০ পিছের ক্যান্ডি জার।
৮। পানিঃ হাফ লিটার ৯ কেনা ১৫ বিক্রি, ১ লিটার ১৪ টাকা ২০ টাকা বিক্রি, ২ লিটার ২২ টাকা কেনা ৩০ টাকা বিক্রি।
৯। চিনিঃ প্রতি কেজিতে ৫ টাকা লাভ।
১০। আটাঃ প্রতি কেজিতে ৫ টাকা লাভ।
১১। চাউলঃ
১২। বিস্কিটঃ ৮ কেনা ১০ বিক্রি, ৪ কেনা ৫ বিক্রি,
১৩। নুডলসঃ ১৭ কেনা ২০ বিক্রি, ৮ কেনা ১০ বিক্রি।
১৪। মিল্ক ভ্যালিনাঃ বাচ্চা কান্দানো হট প্রডাক্ট ১৬ কেনা ২০ বিক্রি।
১৫। ফান এন্ড জয়ঃ ২০ কেনা ৩০ বিক্রি বাচ্চাদের চোখের সামনে রাখবেন আর দেখবেন কি পরিমাণ সেল আর লাভ।
১৬। জুসিল্যান্ডঃ ৪ কেনা ৫ বিক্রি গরমে প্রচুর সেল বাচ্চাদের হট প্রডাক্ট।
১৭। আইস ললিঃ
১৮। ডোরেমনঃ
১৯। চকলেট কাপঃ
২০। দুধের পাতাঃ
২১। চা পাতাঃ
২২। টাইম পাসঃ
২৩। মজার ক্রিম বিস্কিটঃ
২৪। সয়বিন তেলঃ
২৫। সাবান, সেম্পোঃ
২৬। হারপিকঃ
২৭। পান বিড়ি সিগারেটঃ
২৮। চ্যাম্পিয়ন বিস্কিটঃ
২৯। কলম, খাতাঃ
৩০। লবনঃ

উপরোক্ত এই লিস্ট দেখে যদি মুদি ব্যবসা শুরু করেন তাহলে। শুরু থেকেই লাভবান হতে পারবেন। কেননা এই লিস্টে আমি প্রতিটি হট প্রডাক্ট দিয়েছি যা সব সময়ের জন্য মানুষের প্রয়োজন।

মুদিখানা দোকানের নাম

আমি নিম্নে কিছু মুদির দোকানের নামের লিস্ট করে দিচ্ছি।
১। বিসমিল্লাহ ষ্টোর।
২। রাকিব ষ্টোর।
৩। রাকিব ট্রেডার্স।
৪। ভাই ভাই ষ্টোর।
৫। নিজ এলাকার নাম দিয়ে ষ্টোর।
৬। ছেলে মেয়ের নাম দিয়ে ষ্টোর।
৭। বাবা মায়ের দোয়া ষ্টোর।
৮। জনপ্রিয় যায়গার নাম দিয়ে ষ্টোর।
৯। ফুলের নাম দিয়ে ষ্টোর।
১০। রাকিব কনফেকশনারি।

মুদির দোকানের লাভ ক্ষতি

এ ব্যবসায় কোন ক্ষতি নাই, ক্ষতির মধ্যে একটাই সেটা হচ্ছে কোন পন্য যদি পুরে বা ইদুরে কেটে ফেলে সেটাই হবে ক্ষতি। এছারা ড্যামেজ হলেও কোম্পানি উঠিয়ে নিবে। আর লাভের হার এভারেজ শতকরা নিম্নতম ১০ টাকা থাকবেই ধরুন আপনি ১০০ টাকার প্রডাক্ট বিক্রি করলেন তাহলে আপনার লাভ আসবে ১০ টাকা এটি সর্বনিম্ন।

মুদির দোকানের পন্য কিনবেন কই থেকে।

সব সময় মুদির দোকানের জন্য পন্য কিনবেন এস আর দের থেকে অর্থাৎ ডিলারের কাছ থেকে। কারণ তারা সব সময় সঠিক রেটে বিক্রি করবে। আর যদি কখনো হোল সেলের বা নিজ এলাকার বড় দোকান থেকে কিনেন তারা সব সময় বেশি রেট ধরবে।

Leave a Comment