মেয়েদের স্বাস্থ্য কমানোর সহজ উপায়

 

যদিওবা মেয়েদের স্বাস্থ্য বেড়ে যাওয়ার বিশেষ কিছু কারণ রয়েছে। তবে এই অস্বাভাবিক স্বাস্থ্য কে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য মেয়েদের দৈনন্দিন জীবন যাপনে, খাওয়া দাওয়া ইত্যাদিতে বেশ কিছুটা পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। এবং এই পরিবর্তন গুলো নিয়ে আসার জন্য যথেষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে। আর যখন আপনি সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করবেন, ঠিক তখনই কিন্তু আপনি আপনার স্বাস্থ্য কে ধীরে ধীরে কমিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন। তবে স্বাস্থ্য কমানোর এই পরিকল্পনা মতো কাজ করতে গেলে, আপনাকে একটু ধৈর্য ধরতে হবে। কেননা আপনি যদি খুব দ্রুততার সাথে আপনার স্বাস্থ্যকে কমাতে চান এবং কোন আপনার শরীরে কোন মেডিসিন প্রয়োগ করেন, সেক্ষেত্রে কিন্তু ভবিষ্যতে আপনার নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।

মেয়েদের আদর্শ ওজন কত?

মেয়েদের স্বাস্থ্য কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে আপনাকে আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। সেটি হলো যে মেয়েদের আদর্শ ওজন কত! একজন মেয়ে অথবা মহিলার কি পরিমাণ ওজন হলে সেই ওজনকে অস্বাভাবিক বলে গণ্য করা হবে। আসলে যেসব মেয়েদের উচ্চতা 4 ফুট 7 ইঞ্চি থেকে 4 ফুট 5 ইঞ্চি। সেই সব মেয়েদের শারীরিক ওজন হতে হবে 30 থেকে 50 কেজি।

 

এটি হলো স্বাভাবিক ওজন, এবং এর থেকে বেশি ওজন হলে, সেই মেয়ে অথবা মহিলা কে অধিক স্বাস্থবান হিসেবে গণ্য করা হবে। আবার যেসব মেয়েদের উচ্চতা 5 ফুট 1 ইঞ্চি থেকে 5 ফুট 2 ইঞ্চি, সেই সব মেয়েদের ওজন 45 কেজি থেকে 58 কেজি পর্যন্ত স্বাভাবিক। কিন্তু এর থেকে বেশি ওজন হলে সেই ওজনকে অস্বভাবিক বলে গণ্য করা হবে।

মেয়েদের স্বাস্থ্য কমানোর উপায়

কোন একজন মেয়ে মানুষের জন্য অস্বাভাবিক স্বাস্থ্য মানেই হলো অনেক কষ্টকর একটি বিষয়। আর সে কারণে যদি আপনার অস্বভাবিক স্বাস্থ্য হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনাকে বিশেষ কিছু উপায় অনুসরণ করতে হবে। চলুন এবার সেই উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। এবং আপনি যদি সেই উপায় গুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করতে পারেন, তাহলে আপনার স্বাস্থ্য কে কমিয়ে নিতে পারবেন।

01- শর্করা জাতীয় খাবার কম খাওয়া

যদি আপনি আপনার মোটা বা স্বাস্থবান শরীরকে চিকন করতে চান, সে ক্ষেত্রে সবার আগে আপনাকে শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। কারণ যতক্ষন না আপনি শর্করা জাতীয় খাবার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন না, ততক্ষন কিন্তু আপনি কোনোভাবেই আপনার স্বাস্থ্য কে কমিয়ে নিতে পারবেন না। এই শর্করা জাতীয় খাবার থেকে নিজেকে দূরে রেখে আপনি বিভিন্ন ধরনের ফলমূল খেতে পারেন। তবে এই ফলমূল খাওয়ার সময় আরও একটা বিষয় বিশেষভাবে নজর রাখবেন। যেন এই ফলমূল খাওয়ার পরিমাণ টা অতিরিক্ত হারে না হয়। প্রতিদিন চেষ্টা করবেন অল্প অল্প করে খাবার। এবং প্রথম অবস্থাতে ফলমূল খাওয়ার সময় আপনার খাদ্য তালিকায় কলা না রাখার চেষ্টা করবেন। এর পাশাপাশি আপনি একটা বিষয়ে নজর রাখবেন, যে ফল গুলোতে পানির পরিমাণ বেশি, সেই ফল গুলো বেশি পরিমাণে খাওয়ার।

02- পুষ্টিকর খাবার দিয়ে দিনের শুরু করুন

যখন আপনি আপনার স্বাস্থ্যকে কমানোর জন্য ডায়েট করবেন, তখন অবশ্যই আপনার সকালের নাস্তায় ভারী খাবার গুলো কে বর্জন করার চেষ্টা করবেন। এখানে আমি ভারী খাবার বলতে বুঝিয়েছি ভাত, নুডুলস ইত্যাদি। প্রয়োজনে আপনি নিয়মিত ফলমূল খাবেন, এবং এর সাথে আপনি ডিম খেতে পারবেন। ডিমের পুষ্টিগুণ আপনার শরীরকে বাড়তি শক্তি জোগাতে সহায়তা প্রদান করবে। এছাড়াও ডায়েট কন্ট্রোল করার সময় আপনার দুপুরের খাবারের তালিকা সেদ্ধ শাকসবজি রাখার চেষ্টা করবেন। আর এই নিয়ম গুলো মেনে চলার পাশাপাশি আপনাকে নিয়মিত এক কাপ শসা অথবা এক কাপ গাজর খেতে হবে। যেগুলো  খাওয়ার পর আপনার পেটে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়ে থাকবে।

03- শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে

আপনি আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পরিমিত পরিমাণ শাকসবজি এবং ফলমূল রাখতে হবে। তবে চেষ্টা করবেন আপনার সেই খাদ্য তালিকায় ফলমূল এর পরিমাণটা কমিয়ে রাখার জন্য। আর অবশ্যই আপনাকে পরিমিত পরিমাণ শাকসবজি খেতে হবে, কিন্তু একটা কথা অবশ্যই আপনাকে মাথা রেখে চলতে হবে। সেটি হলো যে, এই ধরনের শাকসবজি কিংবা তরকারি রান্না করার সময় অবশ্যই তেল এবং মসলার পরিমান কমিয়ে আনতে হবে। তবে যখন আপনি আপনার স্বাস্থ্যকে কমানোর জন্য ডায়েট করবেন, তখন সেই খাদ্য তালিকায় অবশ্যই আলু কম রাখার চেষ্টা করবেন। তবে আলু বাদে আপনি আরও বিভিন্ন রকম সবজি আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারবেন। যেমন, সিম, বাঁধাকপি, শসা, গাজর ইত্যাদি।

04- নিয়মিত রুটিন অনুযায়ী ব্যায়াম করুন

আপনার অস্বাভাবিক স্বাস্থ্যকে স্বাভাবিক করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। যখন আপনি ডায়েট কন্ট্রোল করার সময় আপনার খাবারের দিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিবেন, তখন অবশ্যই আপনাকে খাবার এর পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। এতে করে আপনার শরীরে জমা হওয়া অতিরিক্ত চর্বি কমতে শুরু করবে। আর ডায়েট কন্ট্রোল করার সময় কখনোই দীর্ঘক্ষন শুয়ে বসে কাটানো যাবে না কেননা আপনাকে সেই সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ শ্রম করতে হবে। যখন আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করবেন, তখন আপনার শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদ এর পরিমাণ কমতে শুরু করবে, যা আপনার স্বাস্থ্য কে কমিয়ে আনার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকবে।

05- ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন

যখন আপনি আপনার স্বাস্থ্যকে কমানোর জন্য ডায়েট কন্ট্রোল করবেন, তখন অবশ্যই আপনাকে ফাস্টফুড এড়িয়ে চলতে হবে। কেননা আপনি ভালো করেই জানেন যে, এই ধরনের ফাস্টফুড কোন একজন ব্যক্তির শরীরে মেদ বাড়ানোর কাজ করে থাকে। আর আপনি যত বেশি ফাস্টফুড গ্রহণ করবেন, আপনার শরীরে মেদ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। তাই এই ধরনের ফাস্টফুড কে এড়িয়ে চলবেন, এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার অনেক কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এসব থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি আপনাকে কৃত্রিম ফলের রস ও বিভিন্ন ধরনের কোমল পানীয় থেকে নিজেকে অনেকটা দূরে রাখতে হবে। কেননা এগুলো আপনার ডায়েট কন্ট্রোলের বাধা প্রদান করবে, এবং আপনার স্বাস্থ্য কমানোর কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে

মেয়েদের স্বাস্থ্য কমানোর উপায় নিয়ে কিছু কথা

প্রিয় পাঠক, উপরের আলোচনায় আমি গুরুত্বপূর্ণ কিছু মেয়েদের স্বাস্থ্য কমানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি আলোচিত এই আলোচনা গুলো আপনি খুব সহজ ভাবে বুঝতে পেরেছেন। তবে এগুলো ছাড়াও আরও বেশ কিছু উপায় রয়েছে, যার মাধ্যমে মেয়েদের স্বাস্থ্য কমানো সম্ভব। আর আপনি যদি সেই উপায় গুলো সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে অবশ্যই নিচে একটা কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব সেই উপায় গুলো সম্পর্কে আপনাদের জানানোর জন্য।

Leave a Comment